ভালবাসা ও বর্তমান যুবসমাজ!

ভালবাসা আসলেই একটা দামি জিনিস। এটা ভোগ করা সবার সাদ্ধের ব্যাপার নয়। এটা অনেকটা দামি শো-পিচ এর মতই। যাদের পকেট এ টাকা আছে ভালবাসা শুধু তাদের জন্যই। পকেট এ টাকা না থাকলে ভালবাসাটা বিলাসিতার পর্যায়ে পরে। আমার এত বিলাসি জীবনযাপন করা সম্ভব নয় কারণ আমি ভাল করেই জানি টাকা না থাকলে ভালবাসা ঘরের জানালা দিয়ে পালাই। আমাদের সমাজে আজকাল এই বিলাসিতা অনেকটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে আমি সেই যুবক-যুবতিদের কথা বলব যারা স্কুল ও কলেজ এ পরে। তারা ভালবাসা বলে যেই অনুভুতি কে আখ্যা দেই তা আসলে ভালবাসা নই বরং সেটা হল লোক দেখানো বিলাসিতা। যুব সমাজ আজ একসাথে ঘুরা, খাবার খাওয়া, উপহার দেওয়া, ইত্যাদি করাকেই ভালবাসা মনে করে। তারা ভালবাসার মুল অর্থকেই উপলুব্ধি করতে পারে না। ভালবাসা হল সৃষ্টিকর্তার দেওয়া একটি পবিত্র উপহার সমগ্র মানবজাতির জন্য কিন্তু আমরা এই উপহার এর পবিত্রতা কতটাই বজাই রাখতে পেরেছি??? আজকাল এই লোক দেখানো ভালবাসায় সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত এই পবিত্র উপহারটির অপমান হয়েই চলেছে। আমরা এখন কেউ আসলে ভালবাসার প্রকৃত অর্থ বুঝতে চাই না। আমরা লোক দেখানো এসব কাজ করতে করতে ভুলেই গেছি যে ভালবাসা অর্থ একসাথে ঘুরতে যাওয়া নয়, নয় একসাথে খাওয়া বা উপহার আদান-প্রদান করা বরং ভালবাসা অর্থ হচ্ছে একে অন্যর সাথে পাশে থেকে তাদের সুখ ও দুঃখের মুহূর্তগুলো ভাগাভাগি করে নেওয়া, নিজেদের মধ্যে খাবার ভাগাভাগি করে ক্ষুধা নিবারণ করা, মৌলিক প্রয়োজনগুলো নিবারণ করার চেষ্টা করা। আজকালকার ছেলে-মেয়েদের এই ভালবাসা দেখলে আমার দুঃখ হয় যে এই সব ছেলে-মেয়ে এই কচি বয়সে ভালবাসার নামে যে সব কাজ করে তা তারা কেন করে তা তারা নিজেরাও হইত জানে না। হইত বন্ধু-বান্ধবের পরামর্শে বা পশ্চিমা দেশগুলোর অপসংস্কৃতিতে আকৃষ্ট হয়ে তারা এসব করে। একটি জরিপ এ দেখাগেছে আজকাল যেসব যুবক-যুবতি প্রেম করে তাদের মধ্যে শতকরা ৯৮ ভাগ ছেলে-মেয়ে ভালবাসার সঠিক অর্থ বুঝবার জন্য মানসিক ভাবে উপর্যুক্ত নয়। একটি সামান্য উদাহরণ তুলে ধরলাম আপনাদের সামনে, একটি স্কুল বা কলেজ এ পড়া মেয়ে যখন তার প্রেমিক এর সাথে ঘুরতে যাই বা কোন দামি রেস্তোরাঁই খেতে যাই বা তার দেয়া উপহার আনন্দের সহিত গ্রহন করে তখন সেই মেয়েটি কি একবারও চিন্তা করে যে তার প্রেমিক তার জন্য খরচ করার জন্য কোথাই টাকা পাই। আনন্দে সে ভুলেই যাই যে তার প্রেমিক এখনও তার বাবা-মার টাকা দিয়ে জীবনযাপন করে। তার প্রেমিক হইত তার জন্য খরচ করার জন্য বাবা-মার কাছে মিথ্যা বলে টাকা আদাই করে বা বাবা-মার টাকার ব্যাগ থেকে টাকা চুরি করে, হইতবা টাকার জন্য নানা অনৈতিক কাজের সাথে জরিয়ে পরে। এই ধরনের মেয়েদের মস্তিষ্ক ভালবাসার সঠিক অর্থ বুঝবার জন্য উপর্যুক্ত নয় বিধাই এসব ঘটনা ঘটেই চলেছে। আজকাল আবার এযুগের ছেলে-মেয়েরা ভালবাসা কে একটি অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। তারা পশ্চিমাদের নকল করতে শুরু করেছে। তারা মনে করে একটি ছেলে আর মেয়ের মধ্যে যদি শারীরিক সম্পর্ক না করা হয় তবে সেই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হই না। তারা জানবার চেষ্টাই করে না যে শারীরিক মিলন কখনও ভালবাসা নয় বরং তা হল জৈবিক চাহিদা পূরণ করার একটি মাধ্যম মাত্র। ভালবাসা মানে যে দুটি আত্মার মিলন এই কথাটি আজ চাপা পরে গেছে এই পশ্চিমাদের অনুকরনের মাধ্যমে। তারা যেটাকে ভালবাসা বলে আমি এটাকে সত্যিকার ভালবাসার আশেপাশে ও দেখি না কারন বর্তমান যুগের ভালবাসাগুলো হল ফ্যাশন। আজকাল আবার দেখা যায় একটি ছেলে বা মেয়ের একাধিক জনের সাথে সম্পর্ক রয়েছে। তারা এসবকে ফ্যাশন মনে করে। যখন ইচ্ছা হয় প্রেমিক-প্রেমিকা কে ছেরে দেয় আবার নতুন কারো সাথে সম্পর্ক তৈরি করে আবার ইচ্ছা হলে তা ভেঙ্গে ফেলে। আমার কথা শুনে অনেকেরই মনে হতে পারে আমি ভালবাসার বিরুদ্ধে। আমার প্রতি তাদের ক্ষোভ জন্মাতেই পারে বা তারা আমার প্রতিবাদ করতেই পারে। তাদের উদ্দেশে আমি বলব যে ভালবাসা বা প্রেম এর বিরুদ্ধে আমি কখনই নই। আমি কেবল মাত্র ওইসকল ভালবাসার বিরুদ্ধে যাতে প্রেমিক-প্রেমিকা বাবা-মার গলায় টাকার ছুরি ধরে প্রেম করে বেড়াই। এইসব নামে মাত্র ভালবাসাকে আমি ধিক্কার জানাই। নিজের যোগ্যতা দিয়ে অর্থ উপার্জন করে তা যদি প্রেমিক-প্রেমিকার জন্য ব্যয় করা হয় তবে তাতে আমার কোন আপত্তি নেই কিন্তু সবার প্রতি আমার একটাই আহবান হল সব সময় প্রেমিক-প্রেমিকার চাইতে বাবা-মাকে প্রাধান্য দিন কারন বাবা-মা আপনাকে নিরস্বার্থ ভাবে ভালবাসে তাই এই ভালবাসাই হল পৃথিবীর সবচাইতে শ্রেষ্ঠ ভালবাসা।
Share this article :
 
Copyright © 2018. নির্জন বাংলা - All Rights Reserved
Template Created by নির্জন বাংলা