অ্যানথ্রাক্স : লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধে করণীয়!

অ্যানথ্রাক্স : লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধে করণীয় অ্যানথ্রাক্স গবাদিপশুর একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ যা ব্যাসিলাস অ্যান্থ্রাসিস (Bacillus anthracis) নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়ে থাকে। ব্যাসিলাস অ্যান্থ্রাসিস ব্যাকটেরিয়া সুপ্ত অবস্থায় দীর্ঘদিন (শতাব্দীর পর শতাব্দী) বেঁচে থাকতে পারে। গবাদিপশু থেকে এ রোগ মানুষেও ছড়াতে পারে। নিঃশ্বাসের সাথে, ত্বকের ক্ষত দিয়ে, কিংবা খাদ্যের মাধ্যমে এই জীবাণুর স্পোর দেহে প্রবেশ করে পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠে এবং দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। একটি সুস্থ্য গরু হঠাৎ করে মারা গেলে এর কারন অ্যানথ্রাক্স হতে পারে। সাধারনত রোগের লক্ষণ প্রকাশের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই গরু মারা যায় আবার অনেকক্ষেত্রে লক্ষণ প্রকাশের সাথে সাথেই গরুটি মারা যেতে পারে। অ্যানথ্রাক্স রোগটি ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ার অসংখ্য রেকর্ড আছে। সর্বশেষ ১৯৭৮-৮০ সালে জিম্বাবুয়েতে ব্যাপক হারে এ রোগটি ছড়িয়ে পড়েছিল। এতে প্রায় দশ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয় এবং ১৫১ জন মারা যায়। কিভাবে ছড়ায় এ রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় গরু। তবে ছাগল, ভেড়া, মহিষ, ঘোড়া, জেব্রা, জিরাফ, হরিণ, শূকর, হাতি কিংবা বানরও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এসব প্রাণী থেকে মানুষে এ রোগটি ছড়াতে পারে। সাধারণত বন্য এবং গৃহপালিত তৃণভোজী স্তন্যপায়ী প্রাণী অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়। এ সকল প্রাণী ঘাস খাওয়ার সময় বা শ্বাস-প্রশ্বাসের সাহায্যে জীবাণুর স্পোর গ্রহন করে এবং অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়। মাংসাশী প্রাণীর ক্ষেত্রে, একইভাবে অথবা আক্রান্ত প্রাণী খাওয়ার ফলে অ্যানথ্রাক্স হতে পারে। আবার আক্রান্ত প্রাণীর সংস্পর্ষে অথবা আক্রান্ত প্রাণীর মাংস খাওয়ার ফলে অ্যানথ্রাক্স মানুষের শরীরেও সংক্রমণ হতে পারে। মৃত বা আক্রান্ত পশুর চুল, পশম, রক্ত, লালা বা অন্যান্য মাধ্যমেও এ রোগ ছড়াতে পারে। আবার মৃত পশু পচে যাওয়ার দীর্ঘদিন পরেও হাড় থেকে এ রোগের জীবাণু ছড়াতে পারে। ট্যানারি থেকে নির্গত বর্জ্যের সঠিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকলে অথবা অ্যানথ্রাক্সে মৃত গরুর চামড়া থেকে জীবাণু সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। সাধারনত অ্যানথ্রাক্স এক পশু বা ব্যক্তির থেকে অন্য পশু বা ব্যক্তির শরীরে ছড়ায় না, এটি স্পোরের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত জীবের মৃতদেহের মাধ্যমে অ্যানথ্রাক্স স্পোর ছড়াতে পারে।
Share this article :
 
Copyright © 2018. নির্জন বাংলা - All Rights Reserved
Template Created by নির্জন বাংলা