জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নিয়ম
প্রথমে দেখা যাক, এ বিষয়ে কী বলা আছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালা-১৯৭২ (পরিমার্জিত-মে, ২০১০)-এ।
বিধি ৪.১ (২)-এ বলা আছে নিম্নবর্ণিত দিবসসমূহে ‘‘পতাকা” অর্ধনমিত থাকিবে:
(ক) ২১শে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস;
(খ) ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস; এবং
(গ) সরকার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত অন্য যে কোন দিবস।
এরপর বিধি ৭ এর (১২)তে বলা আছে ‘‘পতাকা”র সম্মান বজায় রাখার বিষয়ে।
(ক) ২১শে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস;
(খ) ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস; এবং
(গ) সরকার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত অন্য যে কোন দিবস।
এরপর বিধি ৭ এর (১২)তে বলা আছে ‘‘পতাকা”র সম্মান বজায় রাখার বিষয়ে।
বর্ণনাটা এ-রকম: যেক্ষেত্রে ‘‘বাংলাদেশের পতাকা অর্ধনমিত থাকে, সেইক্ষেত্রে প্রথমে সর্বোচ্চ চূড়া পর্যন্ত উত্তোলন করা হইবে এবং অতঃপর নামাইয়া অর্ধনমিত অবস্থায় আনা হইবে। ঐ দিবসে নামাইবার সময় পুনরায় উপরিভাগ পর্যন্ত উত্তোলন করা হইবে, অতঃপর নামাইতে হইবে।’’
তাহলে মনে রাখতে হবে:
প্রথমত,
পতাকা দণ্ডের সর্বোচ্চ চূড়া পর্যন্ত উঠাতে হবে।
দ্বিতীয়ত,
দণ্ডের চূড়া থেকে পতাকা নিচে নেমে আসবে এবং অর্ধনমন অবস্থায় থাকবে।
প্রথমত,
পতাকা দণ্ডের সর্বোচ্চ চূড়া পর্যন্ত উঠাতে হবে।
দ্বিতীয়ত,
দণ্ডের চূড়া থেকে পতাকা নিচে নেমে আসবে এবং অর্ধনমন অবস্থায় থাকবে।
এখানে যা অস্পষ্ট থাকল তা হলো কতোটুকু পরিমাণ অর্ধনমিত থাকবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে আমরা যেটা দেখে আসছি তা হলো, কেউ পতাকাদণ্ডের অর্ধেক পর্যন্ত পতাকা নামিয়ে রাখছেন। আবার কেউ পতাকার প্রস্থের অর্ধেক পর্যন্ত নামিয়ে রাখছেন। আসলে কোনটি সঠিক? নাকি উভয়টিই সঠিক? নাকি আরও ভিন্নকিছু করতে হবে?
শোকদিবসে জাতীয় পতাকার অবস্থান: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালা-১৯৭২ থেকে আমরা বুঝতে পাচ্ছি যে, পতাকা-দন্ডের চূড়া থেকে নিচে পতাকাটি অবস্থান করবে। বিভিন্ন শোক দিবসে উত্তোলিত পতাকার অবস্থান পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে, কমপক্ষে পতাকার প্রস্থের সমান নিচে এবং পতাকা-দণ্ডের অর্ধেকের বা মধ্যবিন্দুর উপরে মাঝামাঝি যে কোন বিন্দুতে পতাকাটি অবস্থান করবে।
বিজ্ঞজনের দৃষ্টিতে এর প্রতীকী তাৎপর্য হলো, পতাকার উপরে যে শূন্য অংশটি থাকে তা যাঁকে বা যাঁদেরকে স্মরণ করা হচ্ছে তাঁদেরই প্রতীক।
বিজ্ঞজনের দৃষ্টিতে এর প্রতীকী তাৎপর্য হলো, পতাকার উপরে যে শূন্য অংশটি থাকে তা যাঁকে বা যাঁদেরকে স্মরণ করা হচ্ছে তাঁদেরই প্রতীক।
শোক দিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নিয়ম মোটামুটি সবদেশে একই রকম। যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার সংজ্ঞা দিয়েছে তা হলো:
The term ‘‘half-staff’’ refers to the position of a flag when it is halfway between the top and bottom of the staff. It is often synonymous with ‘‘half-mast’’, although it is argued that this term should only be used if the flag is displayed on a ship or nautical flagpole. The measurement does not have to be exact, but it should be at least the width of your flag. This is to imply that something is missing above the flag. Many scholars refer to this space as the ‘‘invisible flag of death’’ (Martuccio).
কবে এ প্রথা চালু হয়:
বিশেষ কোন দিনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার যে রীতি তা বাংলাদেশে প্রথম নয়। ঠিক কখন কোথায় যে এ প্রথার প্রচলন শুরু হয় তা বলা মুশকিল। তবে সবচেয়ে পুরোনো রেকর্ড ঘেটে জানা যায় যে, নামক জাহাজের কমান্ডার একজন আমেরিকান আদিবাসী কর্তৃক নিহত হলে তাঁর সম্মানার্থে ১৬১২ সালে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। সে-সময় দেশের পতাকা এরকম কোন কারণে অর্ধনমিত রাখার রেওয়াজটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল।
বিশেষ কোন দিনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার যে রীতি তা বাংলাদেশে প্রথম নয়। ঠিক কখন কোথায় যে এ প্রথার প্রচলন শুরু হয় তা বলা মুশকিল। তবে সবচেয়ে পুরোনো রেকর্ড ঘেটে জানা যায় যে, নামক জাহাজের কমান্ডার একজন আমেরিকান আদিবাসী কর্তৃক নিহত হলে তাঁর সম্মানার্থে ১৬১২ সালে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। সে-সময় দেশের পতাকা এরকম কোন কারণে অর্ধনমিত রাখার রেওয়াজটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল।
লেখক: পিএইচডি গবেষক; প্রভাষক, উত্তর বাংলা কলেজ, কাকিনা, লালমনিরহাট।