Ads

একটানা বসে থাকা ধূমপানের মতোই ক্ষতিকর !!!

গত জুনে শিকোগোয় ‘আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর বার্ষিক সম্মেলনে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সন্দেহ নেই, দীর্ঘক্ষণ চেয়ারে বসে থাকা ক্ষতিকর। কর্মস্থলে এর বিকল্প কী হতে পারে, তা দেখা জরুরি।’ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কম্পিউটারে কাজ করার ব্যবস্থা এবং ‘আইসোমেট্রিক বল’-এর মতো শারীরিক কসরতের কিছু জিনিস অফিসে মজুত রাখার পক্ষেও প্রস্তাব করেছে অ্যাসোসিয়েশন।
এ প্রসঙ্গে কাজের ধরনের পাশাপাশি বর্তমান প্রজন্মের ‘অতিরিক্ত প্রযুক্তিক’ মানসিকতার বিষয়টিও উঠে আসছে।
চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য: এখন আইটি সেক্টর থেকে শুরু করে ব্যাংক, মিডিয়ার মতো বহু ক্ষেত্রে একটানা বসে কাজ করাটাই নিয়ম। আবার অল্পবয়সীদের মধ্যে বাড়িতেও বসে থাকার প্রবণতা বাড়ছে।
undefined
ক্ষতির কারন সম্পর্কে চিকিৎসকদের ব্যাখ্যা:
চলাফেরায় যে সব পেশি ব্যবহার হয়, দিনের পর দিন দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে তার কর্মক্ষমতা কমতে থাকে। পেশিগুলোর ঘনত্ব, শক্তি কমে যায়। নষ্ট হয় কোলাজেন তন্তুর নমনীয়তা। হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে রক্ত ও অক্সিজেন পাঠায়। কায়িক পরিশ্রমের সময়ে সংশ্লিষ্ট অঙ্গের কোষে কোষে বাড়তি অক্সিজেনের দরকার পড়লে হৃৎপিণ্ড সেখানে অধিক অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত পাঠাতে থাকে। কিন্তু বসে থাকলে চলাফেরার পেশির কাজ থমকে যায়, সেখানে অক্সিজেনের চাহিদা কমে। হার্টও বেশি রক্ত পাঠায় না। নিয়মিত দীর্ঘ সময় ধরে তা হতে থাকলে সংশ্লিষ্ট পেশির কোষগুলোর কর্মক্ষমতা তো কমেই, হার্টের সক্রিয়তাও হ্রাস পায়।
মার্কিন চিকিৎসকেরাও জানিয়েছেন, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে শরীরে সব সময় ডায়াবেটিস প্রতিরোধক ইনসুলিন তৈরি হয়। বসে থাকলে যে সব অঙ্গ কার্যত নিষ্ক্রিয় থাকে, সেখানে ইনসুলিনের চাহিদা কমে। ফলে ইনসুলিন-উৎপাদক অঙ্গ, অর্থাৎ প্যানক্রিয়াসের ক্ষমতা কমে। এ ভাবে ডায়াবেটিসের প্রকোপে পড়ছেন অনেকে। আবার ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল নষ্ট করে যে ‘লাইপোপ্রোটিন লাইপেজ’ এনজাইম, তার উৎপাদনও একই ভাবে ব্যাহত হয়। এতে বাড়ে হৃদরোগ, ব্রেন স্ট্রোকের আশঙ্কা।
পরিত্রাণের উপায়:
বিশেষজ্ঞের মতে, “অফিসে কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে কাজ করতে পারলে ভাল। শুনলে হাস্যকর শোনাবে, তবে পারলে জরুরি বৈঠকও হেঁটে হেঁটে করা যেতে পারে। বর্তমানে কম্পিউটার-ভিত্তিক কাজ বেশি। যন্ত্রটিকে দাঁড়িয়ে কাজ করার মতো সুবিধাজনক জায়গায় রাখা যেতে পারে।”
এ ছাড়া বসে-বসেও সহজ কয়েকটি ব্যায়াম করা যায়। কাজের মধ্যে আধ ঘণ্টার ব্যবধানে দুমিনিট হাঁটা যায়। তাতে গ্লুকোজ উৎপাদনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।
সাত পরামর্শ
  • অফিসে একটানা বসে কাজ নয়
  • আধ ঘণ্টা কাজের পরে দু’মিনিট হাঁটুন
  • কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করুন
  • প্রয়োজনে কম্পিউটারেও দাঁড়িয়ে কাজ
  • অফিসে লাঞ্চ সারুন দাঁড়িয়ে
  • বসে বসেই সহজ কিছু ব্যায়াম
  • টিভি’র সামনে টানা বসবেন না ।
Share this article :
 
Copyright © 2018. নির্জন বাংলা - All Rights Reserved
Template Created by নির্জন বাংলা