আপনার পিসির (RAM) র‍্যামকে হার্ডডিস্ক বানিয়ে ফেলুন!! + দ্রুত নেট ব্রাউজিং করুন!

এতদিন শুনেছেন হার্ডডিস্ক/পেনড্রাইভকে র‍্যামে পরিণত করার রাম কাহিনী। যদিও হার্ডডিস্ক/পেনড্রাইভ আসলেই র‍্যাম হয়ে যায় না, তবে Paging file হিসাবে ভার্চুয়াল মেমোরির কাজটুকু করতে পারে। কিন্তু আজকের পোস্টের টাইটেলে যা দেখলেন, তার সবটুকুই সত্যি! অর্থাৎ র‍্যামকে হার্ডডিস্ক বানিয়ে নিতে পারবেন খুব সহজেই। আর কিভাবে এটার মাধ্যমে ক্যাশ ফাস্ট লোডিং করে দ্রুত নেট ব্রাউজিং করবেন তারও ট্রিক্স জানতে পারবেন।


RamDisk কেন ব্যবহার করবেন?
সবাই প্রথমে একটা প্রশ্নই জিজ্ঞাসা করতে বাধ্য হবে, তা হল র‍্যাম ডিস্ক কেন ব্যবহার করবো? কেনই বা র‍্যামের জায়গা দখল করে রাখবো? আরও অনেক প্রশ্ন! এসব কিছুই আপনার মগজে ঘুরছে। আমি কিছুটা ক্লিয়ার কাট ধারণা দিচ্ছি, আশা করি বুঝতে পারবেন।
মোটামুটি সবাই জানেন, র‍্যাম একটি ভার্চুয়াল মেমোরি! এটিতে অস্থায়ী ভাবে ডাটা সংরক্ষণ করা যায়। রিস্টার্ট/শাটডাউন দিলে কোন তথ্যই সেভ থাকে না। এসব সাধারণ জ্ঞান ক্লাস টু-থ্রীর পড়া! আমরা এই  অস্থায়ী ভাবে ডাটা সংরক্ষণ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে র‍্যামকে হার্ডডিস্ক বানিয়ে ফেলবো অর্থাৎ আপনার র‍্যামের কিছু অংশ দখল হয়ে ভার্চুয়াল ডিস্ক ড্রাইভ তৈরি হবে। এখন হয় তো কিছুটা বুঝলেন! আবার প্রশ্ন করতে পারেন, পিসিতে HHD/SSD  হার্ডডিস্ক তো আছেই, তাহলে এক্সট্রা র‍্যাম ডিস্ক দিয়ে কি লাভ??
লাভ আছে! র‍্যাম ডিস্ক তৈরি করে কত সুবিধা পাবেন, তা ব্যবহার করলেই বুঝবেন। প্রথম কথা হল- আপনার র‍্যাম যদি ৪ জিবি হয়, তাহলে, আপনার পিসিতে নরমাল ভাবে ব্যবহৃত হয় ১.৫ জিবি এর মত। আর ড্রাইভ রিসার্ভ ছাড়া বাকি ২ জিবি ফ্রী পরে থাকে। এখন আপনি চাইলে এইটাকে অস্থায়ী ২ জিবি হার্ডড্রাইভ বানাতে পারবেন। তখন র‍্যামে লোড নিবে ১.৫+২ জিবি এর মত, এটা আপনার ব্যবহারের উপর নির্ভর করবে। যাই হোক, যেটা বলছিলাম এটি ব্যবহারে লাভ কি?  এক কথায় উত্তর-  দুর্দান্ত স্পীড ও নিরাপত্তা!!!

নিচের ছকটি লক্ষ্য করুন-
ApplicationHDD Only (sec)HDD / RAM Disk (sec)SSD Only (sec)SSD w/ RAM Disk (sec)
Adobe Reader 10 (opening to large PDF)73.63.53.1
Excel 2010 (opening to large spreadsheet)10 4.13.71.9
Photoshop CS 5.1 (opening to 400MB TIF)22.19.75.54.8
Word 20103.1 1.60.80.4
.
উপরের ছকে, HDD ও RamDisk এবং SSD ও RamDisk এর আপ্লিকেশন লোড টাইম (Sec) এর তুলনা করা হয়েছে। এখানে HDD হল- Hard Disk Drives যেটা আমরা সাধারণত ব্যবহার করে থাকি  এবং SSD হল- Solid State Drive, এটা দ্রুত গতি সম্পন্ন টেকনলজির ডিস্ক ড্রাইভ। যেহেতু আমরা HDD ডিস্ক ড্রাইভ ব্যবহার করে থাকি, সুতরাং SSD নিয়ে আলচনায় গেলাম না বরং HDD ও RamDisk এর আপ্লিকেশন লোড টাইম নিয়ে আলোচনা করা হল।
সাধারণভাবে  বলতে পারি আমাদের হার্ডডিস্কের চেয়ে র‍্যামডিস্কের স্পীড প্রায় ৩ গুণ বেশি! এতে ওই ভার্চুয়াল ড্রাইভে কোন ডেটা রাখলে, তা ট্র্যান্সফার স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ গুণ বেশি গতিতে করতে পারবেন। এছাড়া, কোন আপ্লিকেশন র‍্যামডিস্কে ইন্সটল করলে, তা খুব দ্রুত লোড নিবে এবং কাজেও দ্রুত প্রসেস করবে। উদাহরণস্বরূপ- আপনি Adobe Photoshop 14 ইন্সটল করলেন র‍্যামডিস্কে, তাহলে রিসার্চ করলে পাবেন, ফটোশপ খুব দ্রুত লোড নিবে হার্ডডিস্কের তুলনায়! এতে থেকে বোঝা যায় লোড টাইম শুরু র‍্যামের উপর নয়, ডিস্কড্রাইভের উপরও নির্ভর করে। আর সেই ক্ষেত্রে HDD এর তুলনায় RamDisk অনেক ভালো কাজ করে। আজ এই পর্যন্তই অনেক আলোচনা করলাম। আগামীতে এইসব নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিসয় আলোচনা করা হবে।
.
RamDisk তৈরি করার জন্য  দুটি জনপ্রিয় সফটওয়্যার!
র‍্যামডিস্ক ক্রিয়েট করার জন্য বাজারে অনেক জনপ্রিয় সফটওয়্যার পাওয়া যায়। এই দুটিই খুব ভালো মানের সার্ভিস দেয়! যেমনঃ
1. Gilisoft RamDisk ( গিলিসফট র‍্যামডিস্ক )
২. RamDisk Plus ( র‍্যামডিস্ক প্লাস )
2. Dataram RamDisk ( ডাটার‍্যাম র‍্যামডিস্ক )

.
আজকে Dataram RamDisk ( ডাটার‍্যাম র‍্যামডিস্ক ) সফটওয়্যার ডাউনলোড ও টিউটোরিয়াল পরিবেশন করলাম। আশা করি ভালো লাগবে।

১। প্রথমে  এখানে খোঁচা দিয়ে Dataram RamDisk ডাউনলোড করে নিন। সাইজ- ৫ এমবি।
২। সফটওয়্যারটি ইন্সটল করুন। এরপর রান করুন।
undefined
.
৩।  উপরের ছবির মত Disk size প্রয়োজন 500 MB এর মত সিলেক্ট করুন। [ সাবধান! অতিরিক্ত মাত্রায় সাইজ বাড়াবেন না, নয়তো পিসি স্লও হয়ে যাবে ]
৪।  পার্টিশনে Fat32 Paetitison সিলেক্ট করুন।
৩। বুট সেটিংস এ windows boost sector সিলেক্ট করুন।undefined
৪। এরপর Start RAMDisk এ ক্লিক মারুন। একটি উইন্ডোতে ইন্সটলার আসবে, সেটি ইন্সটল করে নিন।
৫। সর্বশেষে, কিছুক্ষণ পর Computer এ একটি ভার্চুয়াল ডিস্ক ড্রাইভ তৈরি হয়ে যাবে। যা হার্ডডিস্কের তুলনায় অনেক দ্রুত প্রসেস করতে পারবে।
৬। এখন এই RamDisk এ আপনি যেকোনো এপ্লিকেশন, গেম, ডেটা ফাইল রেখে দ্রুত প্রসেস করতে পারবেন। মনে রাখবেন, পিসি রিস্টার্ট বা শাটডাউন দিলে, সব ডেটা মুছে যাবে। এক্ষেত্রে ফাইল Load/Save রাখতে পারেন।
৭। আগামীতে দ্রুত নেট ব্রাউজিং করার জন্য এটির ব্যবহার ট্রিক্স দেখাবো ফুল টিউটোরিয়ালসহ, ততক্ষণ অপেক্ষায় থাকুন পরবর্তী টিউটোরিয়ালগুলার জন্য! ধন্যবাদ সবাইকে।

আজকের টিউটোরিয়াল ও আলোচনা এখানেই শেষ করলাম, আশা করি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পেরেছেন।। আশা করি আগামীতে পরবর্তী টিউটোরিয়াল এবং আলোচনা নিয়ে হাজির হবো। আপনারাও বেশি বেশি কমেন্ট করে আপনাদের ভালো লাগা কিম্বা কি ধরনের পোস্ট আরও চাই তা জানিয়ে দিতে বিন্দু মাত্র দ্বিধা করবেন না!
আজকের পোস্ট আপনার কেমন লাগলো তা মন্তব্য করে অবশ্যই জানাবেন।
Share this article :
 
Copyright © 2018. নির্জন বাংলা - All Rights Reserved
Template Created by নির্জন বাংলা