সিম্বিয়ানের মজা শেষ হতে না হতেই যে অপারেটিং সিস্টেম সবার মন জয় করতে
পেরেছে তা হল অ্যান্ড্রয়েড। গুগলের এই ফ্রি অপারেটিং সিটেমের ব্যবহারবান্ধব
ফিচার সবার কাছেই নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পেরেছিল। কিন্তু এরই মধ্যে
একে টেক্কা দিতে চলে আসছে নতুন নতুন আরো অপারেটিং সিস্টেম। এর মধ্যে সব
চেয়ে বেশি যেটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তা হল ‘টাইজেন” । ‘টাইজেন’ অ্যান্ড্রয়েড
এর মতই এক ধরনেরর অপারেটিং সিস্টেম। আর এটা নিয়ে সব চেয়ে বেশি পরীক্ষা
নিরীক্ষা করছে স্যামসাং। আর তারাই চাচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড এর বদলে মানুষ
টাইজেনের দিকে ঝুঁকুক। এর কারণ অ্যান্ড্রয়েড অনেক কোম্পানি ব্যবহার করলেও
টাইজেন একদমই নতুন। তাই কোনভাবে যদি মানুষকে এর দিকে নিয়ে আসা যায়, তবে
বিশাল অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মার্কেট দখল করতে পারবে স্যামসাং। আর এতে করে
গুগলকে যে লাইসেন্স ফি দিতে হয় সেটাও তাদের সাশ্রয় হবে। তাই এক ঢিলে দুই
পাখি মারার বিশাল পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে স্যামসাং। টাইজেন হচ্ছে
লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম। এটি ডেভেলপ করে ব্যবহারযোগ্য করার জন্য
এর সাথে ইতোমধ্যে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে ৩৬টি বিশ্বখ্যাত কোম্পানি। এর মধ্যে
কোনামি, ম্যাকাফি, প্যানাসনিক, দি ওয়েদার চ্যানেল এবং ইবে অন্যতম। ৩৬টি
কোম্পানির মধ্যে থাকা Appbackr নামের কোম্পানির ট্রেভর কর্নওয়েল জানান, আরও
দক্ষ কোডিং-এর প্রতিশ্রুতি এবং আইওএস বা অ্যান্ড্রয়েডের বাধা ভেঙে
ডেভেলপারদের এইচটিএমএল ৫, সিএসএস এবং জাভাস্ক্রিপ্টে কোডিং করার সুবিধা দেয়
টাইজেন। যা এসব কোম্পানিকে আরও বেশি আকৃষ্ট করেছে। টাইজেন জানিয়েছে, তারা
চাচ্ছে আরও কোম্পানি তাদের সাথে চুক্তি করতে চাইলে তারা হাসিমুখেই তাদের
সাথে যুক্ত হবে। এর কারণ হিসেবে তারা জানান, যত বেশি কোম্পানি তাদের সাথে
থাকবে তাদের প্রচারও ততটা বাড়বে। আর এতে করে বাজারে আসার আগেই এর গ্রাহক
তৈরি হয়ে যাবে।
টাইজেন
তৈরি হয়েছে নোকিয়া আর ইন্টেলের ‘মিগো’ অপারেটিং সিস্টেমকে ডেভেলপ করে। এর
সাথে আছে স্যামসাং বাডা ওএস, যা নিজেদের অপারেটিং সিস্টেমকে কাজে লাগিয়ে
অ্যান্ড্রয়েড এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে টাইজেনকে দাঁড় করাচ্ছে। যে কারণে
বোঝা যাচ্ছে কয়েক ধরনের প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটেছে এখানে। সব মিলিয়ে সহজেই
আন্দাজ করা যায় কোরিয়ান কোম্পানি স্যামসাং কতটা উঠেপড়ে লেগেছে টাইজেনকে
তুলে ধরতে। নানা ধরনের ইলেক্ট্রনিক কোম্পানি আর গেম পাবলিশাররাও যুক্ত
হয়েছে টাইজেন নিয়ে কাজ করতে। এদের সবার নাম প্রকাশ করা হয় টাইজেনের
ডেভেলপার সামিটে। এদের বিভিন্ন প্রতিনিধির কাছ থেকে জানা গেছে টাইজেনের
ফ্লেক্সিবিলিটি আর ওপেনসোর্স পরিবেশের কারণেই এরা আগ্রহ দেখাচ্ছে এই নতুন
অপারেটিং সিস্টেমের প্রতি। সেই সঙ্গে জাভাস্ক্রিপ্টে কোডিং করা কিংবা
এইচটিএমএলে কোডিং করার মত সুবিধা এর প্রতি ডেভেলপার কোম্পানিদের আগ্রহের
অন্যতম কারণ। এ ধরনেরর কিছু সুবিধা দিয়ে ফায়ারফক্সের ওএস অপারেটিং সিস্টেম
বাজারে আসলেও তা অ্যান্ড্রয়েড এর জনপ্রিয়তায় খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি।
শুধুমাত্র যুক্তরাজ্য আর যুক্তরাষ্ট্রের কিছু জায়গায় এর মোটামুটি
জনপ্রিয়তা লক্ষ করা যায়। তাই একে অ্যান্ড্রয়েড এর প্রতিদ্বন্দ্বী বলা যায়
না। তাই সবাই অপেক্ষা করছে, যে টাইজেন নিয়ে সবার এত আগ্রহ, এত আলোচনা সেটা
কেমন করে বাজারে আসে। কিন্তু সেটা দেখার জন্য আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে
হবে। এ বছরের শেষে এটা বাজারে ছাড়ার কথা থাকলেও এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য
পাওয়া যাচ্ছে না।
গুরে আসতে পারেন পেইড ফ্রি এন্ড্রয়েড এপস এবং গেমস এর জন্য এখানে
গুরে আসতে পারেন পেইড ফ্রি এন্ড্রয়েড এপস এবং গেমস এর জন্য এখানে