এফ আর খান: আইনস্টাইন অব স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং। এফ আর খান, ফজলুর রহমান খান, স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং ২০০৯ সাল। কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বললেন, ‘আমরা শ্রদ্ধা জানাই এক বাঙালি প্রকৌশলীকে। তাঁর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। কারণ আমাদের দেশের সর্বোচ্চ আকাশচুম্বী ভবনটি তাঁরই নকশা করা।’ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যাঁকে কৃতজ্ঞ চিত্তে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন তিনি ড. ফজলুর রহমান খান (এফ আর খান)। ১১০ তলা উঁচু সিয়ারস টাওয়ার (১৬ জুন, ২০০৯ থেকে পরিবর্তিত নাম উইলিস টাওয়ার) ছিল ১৯৭৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন। এবং এখনো আমেরিকার সর্বোচ্চ ভবন সেটিই। মূল ফটকে বাংলায় লেখা ‘স্বাগত -’, সাথে আর এফ আর খানের একটা ছবি। ১৯৬৯ সালের কথা, বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ খুচরা বিক্রেতা কোম্পানি তখন ‘সিয়ারস অ্যান্ড কোম্পানি’। তাদের কর্মচারীর সংখ্যা ছিল তিন লাখ ৫০ হাজার। তারা চাচ্ছিলেন, তাদের সকল কাজকর্মের কেন্দ্রস্থল হবে একটি ভবনেই, সবকিছুই নিয়ন্ত্রিত হবে এই একটি ভবন থেকেই, কাজগুলো সম্পন্নও হবে এখানেই। এ জন্য প্রয়োজন সম্পূর্ণ নতুন এক ধরনের স্থাপত্যকৌশল, যা একই সাথে নির্মাণশৈলীর পাশাপাশি স্থান সংকুলানসহ অন্যান্য চাহিদা পূরণে সক্ষম! অনেক অনুসন্ধানের পর তারা খোঁজ পেলেন আমেরিকার বিখ্যাত ও প্রচণ্ড প্রকৌশলী ফজলুর রহমান খানের। যার কারণে সারা পৃথিবীতেই স্থাপত্য শিল্পে বিরাট এক দিগন্তের সূচনা হয়েছিলো, নতুন ভূখন্ডের আবিষ্কারের সাথে সাথে যেমন অপার সম্ভবনা এবং অসংখ্য নতুন নতুন দিক উন্মোচিত হয়, তেমনি স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পুরনো কাঠামোই পুরো বদলে দিয়েছিলেন ওই তরুণ। গতানুগতিক পদ্ধতির বাইরে যেয়ে তিনি আকাশচুম্বী ভবন বানানোর পদ্ধতি আবিস্কার করেন এবং তিনি সফলও হন। তাঁর যুগান্তকারী এ থিওরীর নাম টিউব স্ট্রাকচারাল সিস্টেম । ১৯৬০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আকাশচুম্বী সুউচ্চ ভবনগুলো তার টিউব স্ট্রাকচারাল সিস্টেমকে অনুসরন করেই বানানো। ১৯৬০-১৯৭০ সালের মধ্যেই তিনি বিখ্যাত হয়ে যান তার যুগান্তকারী সৃষ্টি গুলির জন্য। উইলিস টাওয়ারের অদূরেই হ্যানকক ভবন, উচ্চতায় শততলা। সেই স্থাপনার সঙ্গেও জড়িয়ে আছে এফ আর খানের নাম। তিনি ছিলেন গগণস্পর্শী স্থাপনা শিল্পের পথিকৃৎ।
Share this article :
 
Copyright © 2018. নির্জন বাংলা - All Rights Reserved
Template Created by নির্জন বাংলা